রাজার শহরে শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো : প্রথা মেনে ঘট প্রতিস্থাপন

17th October 2020 9:00 pm বর্ধমান
রাজার শহরে শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো : প্রথা মেনে ঘট প্রতিস্থাপন


পিন্টু প‍্যাটেল ( বর্ধমান ) :  বর্ধমানে পুজোর ঢাকে কাঠি পড়লো।রাজ- আমল থেকে চলে আসা প্রথা অনুসারে রাজাদের খনন করা গহীন জলের দিঘি কৃষ্ণসায়রে থেকে ঘটোত্তলন করা হল। বিধি মেনে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হলো এই লোকাচার। বর্ধমানের রাজারা ছিলেন পাঞ্জাবী। পরে বধু হিসেবে নানা রাজ্যের মেয়েরা এসেছেন পরিবারে। তাই রাঢ়-জননী সর্বমঙ্গলার পুজো শুরু হয় প্রতিবার প্রতিপদে। কৃষ্ণসায়র থেকে আচার মেনে জল ভরা হয়।এরপর ঘটস্থাপন হবে। পুজো চলবে নবমী অর্থাৎ নবরাত্রি অবধি। ঘোড়ার গাড়ি ঢাক ঢোল বাদ্যি সবই ছিল। গোটা প্রকরণে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ; মায়ের প্রধান পুরোহিত থেকে সব পুরোহিতেরা শহরের কিছু বিশিষ্ট মানুষ এবারেও অংশ নেন এই রিচ্যুয়ালে।  শুধু সবই হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।নিউ নর্মাল দুনিয়ায় এবারে নন-ফর্মাল পুজো। তাবলে রাজার আমল থেকে চলে আসা প্রথার কোনো ব্যত্যয় হবেনা বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলার পুজোয়।কেবল "স্বাস্থ্য আগে; শাস্ত্র পরে" এই এবারের মূলমন্ত্র। সবার আগে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজো হবে বর্ধমানের মঙ্গলাবাড়িতে।পূর্ব বর্ধমানের সবচেয়ে প্রাচীন আর জনপ্রিয় মন্দির দেবী সর্বমঙ্গলার। রাজা তেজচন্দের আমলে এই মন্দির নির্মাণ হয়েছিল। মন্দির ঘিরে অনেক উপকথা।চুনুরী বাড়ির মেয়েরা মায়ের পাষাণপ্রতিমায় গুগলী থেতো করতেন স্বপ্নাদেশ পেয়ে মাকে এই প্রাচীন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা পেয়েছে হেরিটেজের মর্যাদা। মন্দির সংস্কার হয়েছে।।দেবী দুর্গা এখানে সর্বমঙ্গলা রূপে পুজিতা। সারাবছর বিরাজ করেন তিনি।সব কটি উৎসব রাজ-আমল থেকেই মহাসমারোহে পালিত হয়ে আসছে।পুজোর চারদিন ষোড়শোপচারে দেবী আরাধানা হয়। আগে মহিষ ও পাঠা বলি হত। পূর্বতন জেলাশাসক এর উদ্যোগে এখন বলি বন্ধ। আগে কামান ফাটানো হতো সন্ধিপুজোর মহালগ্নে। ১৯৯৭ এ কামান বিস্ফোরণের পর থেকে তাও বন্ধ। তবু পুজোর পাঁচদিন এখানে তিলধারণের জায়গা থাকেনা। হাজারে হাজারে ভক্ত সমবেত হন। মাছের টক সহ নানা উপাচারে মায়ের ভোগ হয়। মালসাভোগ নিতে ভক্তরা ভিড় করেন।নবমীতে কয়েকহাজার মানুষকে বিনাশুল্কে ভোগ বিতরণ করা হয়।এবারে বেশ কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর মন্দির খুলেছে। জনসমাগম খুব কম। পুজোর আগে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাকে পাশের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।ভক্তরা সঙ্কটে।মায়ের অর্থাগম কম। তাই ভাড়ারে টান পড়েছে মায়েরও।প্রধান পুরোহিত অরুণ ভট্টাচার্য জানান; ১৭;ই অক্টোবর থেকে বিধি অনুসারে ঘটোত্তলন হয় রাজার প্রতিষ্ঠিত  কৃষ্ণসায়রে। শুরু হয়ে গেলো মহাপুজোর নির্ঘন্ট। ঘোড়ার গাড়ি এবারেও ছিলো। মাকে রাজবেশ পড়ানো হবে।তিনি জানান এবারে ঘটস্থাপন হবে।এর মধ্য দিয়েই শুরু হল রাঢ়ের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর আরাধান।দেবীপক্ষের আজ সূচনা মলমাস কাটিয়ে।পিতৃপক্ষ অতিক্রান্ত। জানা গেছে; পায়েস; পোলাও মাছের টকে ভোগ নিবেদন হবে মায়ের। সবই হবে।কেবল ভিড় করা যাবেনা। ভাড়ারে টান পড়লেও রাজ-আমলের থেকে চলে আসা কোনকিছুর ব্যতিক্রম হবেনা। শুধু শাস্ত্রের বিধানের আগে স্বাস্থবিধির নিদান মেনে চলতে চান তাঁরা। গোল দাগের মধ্য থেকে দুরত্ব মেনে পুজো দেওয়া যাবে। নির্দিষ্ট স্থানে পুরোহিতের হাতে ডালা দিতে হবে। স্যানিটাইজেশন করা হবে। ভোগ সীমিত সংখ্যায় বিতরণ হবে আর মাস্ক কিন্তু মাস্ট।এই বিধিনিষেধ এর জেরে অখুশি নন ভক্তরা।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।